ভূমিকা: ফল আমাদের দেশে একটি জনপ্রিয় উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল। রং, গন্ধ, স্বাদ ও পুষ্টির বিবেচনায় বাংলাদেশের ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বৈচিত্র্যময়। ফল বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের সর্বোত্তম উৎস। ফল রান্না ছাড়া সরাসরি খাওয়া হয় বিধায় এতে বিদ্যমান সবটুকু পুষ্টি গ্রহণ করা যায়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ফলের অবদান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের মোট চাষভুক্ত জমির মধ্যে ফলের আওতায় মোট ফসলভিত্তিক আয়ের ১০% আসে ফল থেকে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল উৎপাদিত না হওয়ায় আমাদের প্রতিদিন যে পরিমাণ ফল খাওয়া দরকার আমরা সে পরিমাণ পাই না। বাংলাদেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ১৪ লক্ষ ৫ হাজার মে. টন ফলের উৎপাদন হয়। দেশে ফল চাষের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সেই হারে ফলের আবাদ হচ্ছে না। তাই নানাবিধ চাহিদা মিটানোর জন্য ফল চাষের গুরুত্ব অপরিসীম।
ফল চাষের প্রয়োজনীয়তা
- অধিকাংশ ফলই সুস্বাদু, পুষ্টিকর, মুখরোচক এবং তৃপ্তিদায়ক।
- ফলে ভিটামিন ও খনিজ লবণের পরিমাণ বেশি।
- ফল আমরা কাঁচা বা পাকা অবস্থায় সরাসরি খেয়ে থাকি। তাই ফলের পুষ্টি উপাদানের অপচয় কম হয়।
- তাছাড়া ফলের শ্বেতসার, আমিষ এবং স্নেহ জাতীয় উপাদানগুলো সহজেই হজম হয়।
- একটি কারণে শাকসবজির তুলনায় ফলের গুরুত্ব বেশি, তা হলো সবজি রান্না করার ফলে ভিটামিন ‘সি’ অনেকাংশে কম হয়ে যায়। এজন্য ভিটামিন ‘সি’ এর ঘাটতি পূরণের জন্য দ্রুত বর্ধনশীল ফলের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কোনো না কোনো ফল অবশ্যই থাকতে হয়।
- ফল শুধু খাদ্য হিসেবেই নয় জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে, চিকিৎসাশাস্ত্র, সামাজিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদিতে নানাভাবে অবদান রাখছে। ফলকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নানা শিল্প, এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। ফল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।
- ফল শুধু মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি জোগায় না এটি পশু পাখিরও খাদ্য জোগায়।
- পরিবেশ সংরক্ষণ করে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং মাটির ক্ষয়রোধ করে।
- কাঠ ও জ্বালানি জোগায়।
- তদুপরি প্রতিটি ফলে রয়েছে অনেক ভেষজগুণ।
- আমাদের ফসলভিত্তিক জাতীয় আয়ের শতকরা ১০ ভাগ আসে ফল থেকে। বর্তমানে ফল চাষের আওতায় প্রায় ২% (১ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর) জমি রয়েছে।
- জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন সরবরাহ করে।
ফলের পুষ্টিমান
ফলে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শারীরিক বাড়-বাড়তি, মেধার বিকাশ, ভিটামিনের চাহিদা পূরণ, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বহুমাত্রিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। নিম্নে আম, পেয়ারা, পেঁপে, কলা ও লিচুতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানসমূহ উল্লেখ করা হলো।
আমের পুষ্টি উপাদান
জাতভেদে আমের বিভিন্ন বৃদ্ধি ধাপে পুষ্টি উপাদান বিভিন্ন হয়ে থাকে। কাঁচা ও পাকা আমের পুষ্টি উপাদানের মধ্যেও যথেষ্ট তারতম্য থাকে। তবে সাধারণভাবে কাঁচা আমে ৯০% জলীয় অংশ, ০.৭% প্রোটিন, ০.০১% চর্বি, ৮.৮% শর্করা, ০.০১% ক্যালসিয়াম, ০.০২% ফসফলাস, ৩ মিগ্রা/১০০ গ্রাম অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (ভিটামিন সি), ৪.৫ মিগ্রা/১০০ গ্রাম লৌহ, ১৫০ আন্তর্জাতিক একক ভিটামিন এ প্রভৃতি থাকে। পাকা আমে শতকরা ৭৮-৮৬ ভাগ পানি, ৭.৮-১৪ ভাগ শর্করা, ০.৬-১ ভাগ আমিষ, ০.৬ ভাগ স্নেহ, ০.০১ ভাগ ক্যালসিয়াম, ০.০২ ভাগ ফসফরাস, ০.৩ ভাগ লৌহ থাকে। এছাড়াও আমের পাকা শাঁসে ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন বি, ও ভিটামিন সি থাকে।
লিচুর পুষ্টি উপাদান
- লিচুতে ভিটামিন সি এবং খাদ্যশক্তি রয়েছে।
পেয়ারার পুষ্টি উপাদানঃ
পেয়ারা ভিটামিন সি, পেকটিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের একটি অন্যতম উৎস। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ অন্যান্য ফল যেমন- কমলা লেবু, বাতাবি লেবু, বিলিম্বি, লিচু, ডালিম, জলপাই, কামরাঙা প্রভৃতির চেয়ে পেয়ারায় বেশি ভিটামিন সি থাকে। সাধারণভাবে পেয়ারার আহার উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রামে নিম্নলিখিত পরিমাণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকে। তবে ঋতু, পরিপক্বতা ও জাতভেদে এর তারতম্য হতে পারে।
পানি | ৮২ গ্রাম | খনিজ লবণ | ০.৬ গ্রাম | ক্যালসিয়াম | ২০ মিলিগ্রাম |
আমিষ | ১.৪ গ্রাম | ভিটামিন বি, | ০.২১ মিলিগ্রাম | লৌহ | ১.৪ মিলিগ্রাম |
শ্বেতসার | ১৫.২ গ্রাম | ভিটামিন বি | ০.৯০ মিলিগ্রাম | ক্যারোটিন | ১০০ মাইক্রোগ্রাম |
চর্বি | ১.১ গ্রাম | ভিটামিন সি | ২১০ মিলিগ্রাম | শক্তি | ৭৬ কিলোক্যালরি |
কলার পুষ্টি উপাদানঃ
কলায় ক্যালরি, শর্করা, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন সি রয়েছে।
পেঁপের পুষ্টি উপাদান
আমের পরই ভিটামিন ‘এ’ এর প্রধান উৎস হলো পাকা পেঁপে। এ ছাড়া কাঁচা পেঁপে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন হজমকারী পেপেইন থাকে। নিচে পাকা পেঁপের পুষ্টি উপাদান ও পুষ্টিমানের উল্লেখ করা হলো। জাতভেদে পেঁপের এ পুষ্টিমানের সামান্য তারতম্য হতে পারে।
পুষ্টি উপাদান | শতকরা পরিমাণ |
পানি | ৮৯.৬% |
আমিষ | ০.৫% |
চর্বি | ০.১% |
শর্করা | ০.৫% |
ক্যালসিয়াম | ০.০১% |
ভিটামিন ‘এ’ | 0.8% |
ভিটামিন বি২ | ২০২০ আন্তর্জাতিক একক/১০০ গ্রাম |
ভিটামিন ‘সি’ | ৪০ মিলিগ্রাম/ |
নিকোটিনিক অ্যাসিড | ০.২ মিলিগ্রাম/” |
রাইবোফ্লাবিন | ২৫০ মিলিগ্রাম/” |
ক্যালরি মূল্য | ৪০ ক্যালরি/” |
আমাদের ফেসবুক পেজ = Siraj Tech Facebook
ছাদ বাগান করার জন্য জিও ব্যাগের অর্ডার করতে = Geo Grow Bag
দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সব ফল ও শাক-সব্জির বীজ পাবেন আমাদের কাছে। 👉 HIGH QUALITY GARDENING SEEDS
ছাদ বাগানের বিভিন্ন সরঞ্জাম। 👉 HIGH QUALITY GARDENING TOOLS
গাছের জন্য বিভিন্ন জৈব কীটনাশক। 👉 ORGANIC FERTILIZERS AND PESTICIDES
নদী ও পুকুরের পাড় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও রোল। 👉Geobag Geotube and Geosheet