Cultivation of amlaki on the roof – ছাদে আমলকীর চাষ।

Cultivation of amlaki on the roof

বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া ও চীনে আমলকীর বিস্তৃতি রয়েছে। বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জের প্রায় সব এলাকাতেই আমলকীর গাছ দেখা যায়। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল এলাকার পত্রমোচনশীল জঙ্গলে দেখা যায়। অঞ্চলভেদে এটিকে আমলা বলা হয়। আমলকীকে ইংরেজিতে বলা হয় Indian Gooseberry। এটার বৈজ্ঞানিক নাম: Emblica officinalis Gaertn. আমলকী মাঝারি ধরনের পত্রঝারা বৃক্ষ, ৩-৪ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। হালকা সবুজ পাতা যৌগিক পত্রের পত্রক ছোট, সাধারণত ১০-১৩ মিমি, লম্বা ও ২-৩ মিমি চওড়া হয়। হালকা সবুজ রঙের ছোট ছোট পুরুষ ও স্ত্রী ফুল একই গাছে ধরে, তবে স্ত্রী ফুলের তুলনায় পুরুষ ফুলের সংখ্যা অনেক বেশি হয়। ফলের রং হালকা সবুজ বা হলুদ এবং আকৃতি গোল ও ব্যাসার্ধ ১.২-২.৫ সে. মি.। কাঠ অনুজ্জ্বল লাল অথবা বাদামি লাল। প্রতি ১০০ গ্রাম টাটকা আমলকীতে গড়ে ৭০০-১৬০০ মি.গ্রা. ভিটামিন-সি থাকায় এটি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠতম ফল হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার দাবি রাখে। আজকাল হাইব্রীড জাতের আমলকীর কলম পাওয়া যায়, যা খেতে ততটা টক নয় এবং দেখতেও বেশ সুন্দর। সুতরাং, খুব সহজেই সাধারণ আমলকী এবং হাইব্রীড আমলকী ছাদ বাগানের ছাদে চাষ করা যায়। সবার কাছে পরিচিত ফল আমলকীর রয়েছে অসাধারণ ঔষধি গুণাগুণ।

বাচ্চাদের ঠান্ডা-কাশি প্রতিরোধে এ ফল খুবই উপকারী। ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকী, হরীতকী ও বহেড়ার প্রতিটির সমপরিমাণ গোঁড়ার শরবত কোলেস্টেরল কমাবার অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ কমাবার মহৌষধ। এক ওষুধ গবেষক দলের মতে আধুনিক যেকোনো অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের তুলনায় ত্রিফলা কোলেস্টেরল কমাবার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসূ। এই গবেষকদের মতে দ্রব্যগুণের দিক দিয়ে হরীতকীই সর্বশ্রেষ্ঠ, দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে আমলকী এবং তৃতীয় স্থানে বহেড়া। আমলকীর ফল ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ, এটি মূত্রবর্ধক, বায়ুনাশক ও বিরোচক হিসেবে কাজ করে। এবং যেকোনো কারণেই হোক ঘুম না হলে, পেট ফাঁপা বা অম্ল নিরাময়ে, চোখ ওঠা রোগে, পিত্ত বেদনায়, বমি বন্ধ করতে, শ্বেতপ্রদর রোগ হলে, অর্শ, ডায়রিয়া, আমাশয়, রক্তস্বল্পতা, জন্ডিস ও ত্বকের সমস্যায় কাজ করে। এছাড়া আমলকীর ফুলও ঠান্ডাকারক ও বিরোচক হিসেবে কাজ করে। সুতরাং, আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমলকী খাওয়া আবশ্যক।

 বীজ সংগ্রহ চারা উত্তোলন :

 আমলকী গাছে মার্চ-মে মাসে ছোট ছোট হলুদাভ ফুল দেখা গেলেও ফল পাকে নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাসে। আমলকীর বীজ সংগ্রহের সাথে সাথে বীজ মাটিতে বা সীড বেডে বপন করতে হয়। এ অবস্থায় ১৫ দিনে বীজ গজাতে শুরু করে, তবে অঙ্কুরোদগম হার মাত্র ৪০ ভাগ। এক্ষেত্রে বীজ ৮০ ডিগ্রি সে. তাপে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে বপন করলে ১০ দিনে বীজ গজাতে শুরু করে এবং অঙ্কুরোদগমের হার হয় শতকরা ৮০ ভাগ পর্যন্ত। বীজ এবং কলম দুই পদ্ধতিতে এ গাছের বংশবিস্তার হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সব নার্সারীতেই আমলকীর চারা পাওয়া যায়। আমলকী গাছ লাগানোর ৪/৫ বছরের মধ্যে তা ফলবান হয়। তবে আমলকীর কলম লাগালে ২ বছরের মধ্যেই আমলকী পাওয়া যায়। টবে চাষ করবার জন্য আমলকীর কলম লাগানোই উত্তম। তাতে করে খুব তাড়াতাড়ি আমলকী পাওয়া সম্ভব।

 ছাদে আমলকীর চাষ এবং পরিচর্যা  :

ছাদে আমলকীর চারা/কলম চারা লাগানোর জন্য হাফ ড্রাম বা একই মাপের সিমেন্টের পট বা জিও ব্যাগেও আমলকী লাগানো যেতে পারে। পট বা টব নির্বাচনের পরে এই বইয়ের “ছাদ বাগানের জন্য মাটি প্রস্তুত ও চারা রোপণ” অধ্যায়ে ছাদ বাগানের জন্য “ছাদ বাগানের জন্য আদর্শ মাটি তৈরি করত সেখানে আমলকীর কলম/কাটিং রোপণ করতে হবে। চারা গাছটিকে সোজা করে সঠিকভাবে রোপণ করতে হবে। তারপর গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উঁচু করে হাত দিয়ে মাটি চেপে চেপে দিতে হবে। ফলে গাছের গোড়া দিয়ে পানি বেশি ঢুকতে পারবে না। একটি সোজা চিকন লাঠি দিয়ে গাছটিকে বেঁধে দিতে হবে। চারা রোপণের শুরুর দিকে পানি অল্প দিলেই চলবে। পরে ধীরে ধীরে পানি দেওয়া বাড়াতে হবে। তবে গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেওয়া যাবে না। মাটিতে রসের ঘাটতি দেখা দিলে প্রয়োজনমতো গাছে সেচ দিতে হবে। সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অত্র পুস্তকের “ছাদ বাগানের নিয়মিত পরিচর্যা” অধ্যায়ের “বিভিন্ন বয়সি ফল গাছের জন্য বছরভিত্তিক সার প্রয়োগের মাত্রা” অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়মাবলি অনুসরণ করুন। অধিকন্তু অন্যান্য পরিচর্যার ব্যাপারেও “ছাদ বাগানের নিয়মিত পরিচর্যা” অধ্যায়ের অপরাপর বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ রাখতে হবে।

পোকামাকড় রোগবালাই দমন :

আমলকী গাছে পোকামাকড় ও রোগবালাই নেই বললেই চলে। তবুও রোগ বা পোকা আক্রমণ থেকে বাঁচতে-

১. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

 ২. ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ও অতি ঘন ডালপালা ছাঁটাই করে পরিষ্কার করে দিন।

 ৩. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পর ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক পুরো গাছে ভালোভাবে স্প্রে করুন। চারা/কলমের প্রাপ্তিস্থান :    বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার সেন্টারসমূহ, বিএডিসি’র এগ্রো সার্ভিস সেন্টার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে ভালো জাতের আমলকীর চারা/কলম পাওয়া যায়। আবার বিশ্বস্ত ব্যক্তির কাছ থেকেও এসব চারা/কলম সংগ্রহ করতে পারেন।

আমাদের ফেসবুক পেজ = Siraj Tech Facebook

গাছের জন্য বিভিন্ন জৈব কীটনাশক। 👉 Organic Fertilizers and Pesticides

ছাদ বাগান করার জন্য জিও ব্যাগের অর্ডার করতে 👉 Geo Grow Bag

দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সব ফল ও শাক-সব্জির বীজ পাবেন আমাদের কাছে। 👉 High Quality Gardening Seeds

ছাদ বাগানের বিভিন্ন সরঞ্জাম। 👉 High Quality Gardening Tools

নদী ও পুকুরের পাড় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও রোল। 👉Geobag Geotube and Geosheet

Our Product Categories

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *