Essential materials for roof garden – ছাদ বাগানের প্রয়োজনীয় উপকরণ

Essential materials for roof garden

Essential materials for roof garden – ছাদ বাগান করতে অনেক ধরনের উপকরণের প্রয়োজন। এর মধ্যে জিও গ্রো ব্যাগ অন্যতম। বেশ কয়েক বছর যাবৎ এই ব্যাগ বাজারে এসেছে। জিও গ্রোয়িং ব্যাগ বিভিন্ন নামে বাজারে পাওয়া যায়। কেউ এটি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ, জিও সিনথেটিক ব্যাগও বলে থাকে।

এই ব্যাগের রোল এক সময় বিদেশ থেকে আসলেও এখন এটা আমাদের দেশেই তৈরি হচ্ছে। আমরা সাধারণত ছাদ বাগানের জন্য হাফ ড্রাম বা প্লাস্টিক পট বা সিমেন্টের পট ব্যবহার করে থাকি। বেশ কিছুদিন ব্যবহারের পরে হাফ ড্রামের নিচে মরিচা পড়ে তলা ভেঙে যায়; রোদ বৃষ্টিতে প্লাস্টিক ট্রেও এক সময় নষ্ট হয়ে যায়।

সেই তুলনায় ওজনে হালকা জিও ব্যাগ ব্যবহারের কিছু সুবিধা আছে। জিও টেক্সটাইল হলো এক ধরনের টেকনিক্যাল টেক্সটাইল (দেখতে অনেকটা চালের বস্তার মতো), যা মাটির উপরিভাগে বা অভ্যন্তরে ব্যবহার করে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। অনেকেই এটাকে চটের ব্যাগ ভেবে ভুল করলেও এটা মূলত চটের ব্যাগ নয়। জিও (Geo) অর্থ ভূখণ্ড বা মাটি এটা থেকেই এ ধরনের নামকরণ বলে ধারণা করা হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নতুন বিপ্লব জিওটেক্সটাইল। বিভিন্ন বড় বড় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্টে বহুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে এই জিও- টেক্সটাইল। যেটা বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা যেমন রাস্তা, ড্রেন, গৃহায়ন, নদীভাঙন, পাহাড় ধস, ড্রেইনেজ, কোস্টাল ওয়ার্ক, বাঁধ তৈরি প্রভৃতি কাজে ব্যবহৃত হয়।

আবার মাটির বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে দুর্বল ও অকার্যকর জায়গায় ভবন নির্মাণেও এটার জুড়ি মেলা ভার। অধিকন্তু, এটা স্থাপত্য প্রকৌশলী শিল্পের আরও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়। জিওটেক্সটাইল পলিমার ফেব্রিক বা জিও টেক্সটাইল প্রোডাক্ট মূলত পলিস্টার, পলিপ্রপিলিন, পলিঅ্যামাইড দিয়ে তৈরি করা হয়। জিও টেক এর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় সিভিল/কনস্ট্রাকশনের কাজে। এতে এর উপযোগী করে তুলে।

গ্রোয়িং ব্যাগ কেনার আগে সাবধানতা:

 গ্রোয়িং ব্যাগ নিয়ে এখন বেশ তেলেসমাতি শুরু হয়েছে। এরমধ্যে দারুণ মারপ্যাঁচ রয়েছে। কেউ কেউ পাতলা প্লাস্টিকে তৈরি দুর্বল মানের হাতল লাগানো পটকে জিও ব্যাগ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এই ব্যাগের পুরুত্ব বা থিকনেস একটা গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে ভালো ৫০০-৬০০ জিএসএস এর ফেল্ট ফেব্রিক্স দ্বারা তৈরি করা ব্যাগ ক্রয় করা। আপনার পছন্দমতো একটা রং দেখে কিনতে পারেন। ফলে চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ না হয়ে ভালোভাবে জেনে শুনে বুঝে ব্যাগ কিনতে হবে।

চিত্র: জিও গ্রোয়িং ব্যাগ

কোদাল বেলচা: পটের বা টবের মাটি মেশানোর জন্য ছোট এবং বড় আকৃতির দুইটা ধারালো কোদাল এবং একটি বেলচা সবসময়ের জন্য ছাদ বাগানের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।

কোদাল ও বেলচা

                                                                                                                   চিত্র: কোদাল (বামে) এবং বেলচা (ডানে)

নিড়ানি বা খুরপি: বাগানের টবের বা পটের গাছের চারপাশের আগাছা দমনের জন্য একটা নিড়ানি বা খুরপির প্রয়োজন হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের নিড়ানি বা খুরপি পাওয়া যায়, সেখান থেকে নিজের পছন্দমতো নিড়ানি বা খুরপি সংগ্রহ করে নিতে হবে।

নিড়ানি বা খুরপি

 চিত্র: নিড়ানি বা খুরপি

কাঁচি, হাসুয়া, করাত: ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের ডালপালা এবং মরা লতাপাতা কাটার জন্য ধারালো একটা কাঁচি, একটা হাসুয়া ও একটা করাত অবশ্যই দরকার হবে।

কাঁচি, হাসুয়া, করাত

বাডিং নাইফ: ছোট ডাল কাটা সহ নিজের উদ্যোগে কলম তৈরি করার কাজে বিশেষ ধরনের অত্যন্ত ধারালো বাডিং নাইফ বেশ ভালো কাজ করে। কলম করার জন্য এটা বেশ কাজে লাগে।

বাডিং নাইফ

 চিত্র: বাডিং নাইফ

 সিকেচার: গাছের ছোট ছোট ডাল কর্তনের জন্য কাঁচি ধরনের বিশেষ ধরনের ধারালো যন্ত্রকে সিকেচার বলে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের চমৎকার সব সিকেচার কিনতে পাওয়া যায়। তাই নিজের পছন্দমতো এক বা একাধিক সিকেচার অবশ্যই কিনে রাখতে হবে।

সিকেচার

 চিত্র: বাজারে পাওয়া যায় এমন বিভিন্ন ধরনের সিকেচার

হ্যান্ড স্প্রেয়ার: বালাইনাশক স্প্রে সহ কখনো, অণুখাদ্য পাতায় স্প্রে এবং কখনো পাতায় বা গাছে পানি স্প্রে করার জন্য একটা ছোট খাটো হ্যান্ড স্প্রেয়ার অবশ্যই থাকতে হবে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের বহনযোগ্য হ্যান্ড স্প্রেয়ার পাওয়া যায়। নিজের পছন্দমতো এগুলো কিনে নিতে হবে। ছাদ বাগানের জন্য বড় ধরনের স্প্রেয়ারের দরকার নেই।

হ্যান্ড স্প্রেয়ার

চিত্র: বাজারে পাওয়া যায় এমন ছোট মানের স্প্রেয়ার

জৈব রাসায়নিক সার: ছাদ বাগানের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈবসার ব্যবহার করতে হবে। উত্তম জৈবসার হলো গোবর থেকে উৎপাদিত ভার্মিকম্পোস্ট। সেই সাথে ইউরিয়া, টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট), এমওপি (মিউরেট অব পটাশ), জিপসাম, দস্তা এবং পাতায় স্প্রে করার জন্য কিছু অণুখাদ্য। মনে রাখতে হবে, জৈবসার ইচ্ছামতো ব্যবহার করা যাবে কিন্তু রাসায়নিক সার এবং পাতায় স্প্রে করার জন্য অণুখাদ্য খুব হিসাবনিকাশ করে এবং ভালোমতো জেনেবুঝে ব্যবহার করতে হবে। পাতায় অণুখাদ্য স্প্রে করতে গিয়ে সেটার মাত্রার তারতম্য হলে গাছের সমস্ত পাতা মারা যেতে পারে। সম্পূর্ণ পচে যাওয়া জৈবসার ব্যবহার করতে হবে। কাঁচা গোবর, চায়ের পাতি, হাঁসমুরগি বা পাখির বিষ্ঠা কখনোই সম্পূর্ণ পচে যাওয়ার আগে ব্যবহার করা যাবে না। আবার রাসায়নিক সার খুব সাবধানতার সাথে ব্যবহার করতে হবে, নইলে হিতে বিপরীত হয়ে গাছ বা গাছের সমুদয় পাতা মারা যেতে পারে। মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট

জৈব ও রাসায়নিক সার

অন্যান্য উপকরণ: উপর্যুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যতিরেকে ছাদ বাগানের জন্য আরো যেসব উপকরণের প্রয়োজন হবে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো: পানি দেওয়ার ঝরনা, পাদ্রি দেওয়ার পাইপ (সাথে ঝরনা লাগানোর ব্যবস্থা), প্লাস্টিক গামলা, মাটি চালার চালুনি ইত্যাদি।

 বীজ, চারা কলম: ছাদ বাগান করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে বীজ, চারা এবং কলমের। বীজ, চারা এবং কলমের ক্ষেত্রে জাতের বিশুদ্ধতা অত্যন্ত জরুরি।

যদি বীজ, চারা এবং কলমের বিশুদ্ধতা না থাকে, তাহলে ফল ধরার পরে সবকিছুই বিফলে যাবে। ফুলের ক্ষেত্রে, যে গাছের লতাপাতায় ফুল ফোটে সেটা দেখে কিনলে ফুলের জাত নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে অন্যান্য সবজি বা ফলদ গাছের ক্ষেত্রে বীজ, চারা এবং কলমের বিশুদ্ধতা অনেক বেশি জরুরি। সবচেয়ে ভালো বিশ্বস্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সম্ভব হলে বীজ, চারা এবং কলম সংগ্রহ করা। বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভালোমানের বীজ, চারা এবং কলম সরবরাহ করে থাকে, সেগুলো জেনেবুঝে সংগ্রহ করতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। সবজি চারার ক্ষেত্রে প্যাকেটের চারা সংগ্রহ করতে হবে।

আজকাল অনেক নার্সারি বিশেষ পদ্ধতিতে নারকেলের ছোবড়া ব্যবহার করে প্লাস্টিক ট্রে’তে সবজি চারা উৎপাদন করে বিক্রি করে থাকে। প্লাস্টিক ট্রে’তে উৎপাদিত সবজি চারা ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে উত্তম। কলমের চারার ক্ষেত্রে কখনোই বড় চারা সংগ্রহ করা যাবে না। ১-২ বছরের কলম সংগ্রহ করতে হবে। বাজারে অনেক ধরনের টবের গাছ পাওয়া যায়, যেখানে আম, আমড়া তথা ফল ধরে থাকে; এ ধরনের কলম সংগ্রহ থেকে একদম বিরত থাকবে হবে। এগুলো দেখতে ভালো, কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে এগুলো থেকে কখনোই ভালো ফলাফলের আশা করা যায় না। তাই সুস্থ, সবল এবং নীরোগ বিশুদ্ধ জাতের কমবয়সি চারা কেনা ভালো।

যত ছোট চারাই হোক না কেন, সেগুলোকে পরিচর্যার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখতে পারলে সেখান থেকে ভালো ফলাফল আসবে। আম, আমড়া, জামরুল, লেবু, করমচা, জাম, বাতাবীলেবু, ডালিম, মাল্টা, কুল সহ বেশ কিছু ফলের এখন হাইব্রীড জাত পাওয়া যায়, যেগুলো অনায়াসে হাফ ড্রামে চাষ করা যায়।প্রকৃত হাইব্রীড, নাকি নকল হাইব্রীড সেটা কেনার আগে ভালো করে নিশ্চিত হতে হবে। কোন কোন জাতের কী ধরনের ফলফুল ও সবজি ছাদ বাগানে চাষ করা যাবে, এ ব্যাপারে আমরা পরবর্তী অধ্যায়গুলো থেকে বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করব।

আমাদের ফেসবুক পেজ = Siraj Tech Facebook

ছাদ বাগান করার জন্য জিও ব্যাগের অর্ডার করতে 👉 Geo Grow Bag

দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সব ফল ও শাক-সব্জির বীজ পাবেন আমাদের কাছে। 👉 High Quality Gardening Seeds

ছাদ বাগানের বিভিন্ন সরঞ্জাম। 👉 High Quality Gardening Tools

গাছের জন্য বিভিন্ন জৈব কীটনাশক। 👉 Organic Fertilizers and Pesticides

নদী ও পুকুরের পাড় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও রোল। 👉Geobag Geotube and Geosheet

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *