Vermicompost Fertilizer – কেঁচো সার ভার্মি কম্পোস্ট
Vermicompost Fertilizer – কেঁচো সার ভার্মি কম্পোস্ট – কেঁচো কম্পোস্ট একটি জৈব সার যা জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয় । ১ মাসের বাসী গোবর খেয়ে কেঁচো মল ত্যাগ করে এবং এর সাথে কেঁচোর দেহ থেকে রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে যে সার তৈরি হয় তাঁকে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট বলা হয়। এটি সহজ একটি পদ্ধতি ১ মাসের বাসী গোবর দিয়ে ব্যবহার উপযোগী উৎকৃষ্ট জৈব সার তৈরি করা হয়।
🌱 ভার্মি কম্পোস্ট (Vermicompost) কী এবং এতে কী কী উপাদান থাকে?
ভার্মি কম্পোস্ট হলো কেঁচো দিয়ে তৈরি জৈব সার, যা মাটির উর্বরতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে উদ্ভিদের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করে এবং রাসায়নিক সার ছাড়াই গাছের ভালো ফলন নিশ্চিত করে।
🟢 ভার্মি কম্পোস্টের প্রধান উপাদানসমূহ:
✅ ১. জৈব উপাদান (Organic Matter)
- গোবর, গাছের পাতা, সবজি ও ফলের খোসা, খামারের আবর্জনা, রান্নাঘরের বর্জ্য, ঘাস ইত্যাদি।
- কেঁচো এসব উপাদান খেয়ে পচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিকর সার তৈরি করে।
✅ ২. উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস (Beneficial Microbes)
- ভার্মি কম্পোস্টে থাকে নাইট্রোজেন ফিক্সিং ব্যাকটেরিয়া ও মাইক্রোফাঙ্গাস, যা মাটির গুণগত মান উন্নত করে।
✅ ৩. ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস (Macronutrients)
- নাইট্রোজেন (N) – গাছের পাতা ও কান্ড বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- ফসফরাস (P) – গাছের শিকড় গঠনে সহায়ক।
- পটাশিয়াম (K) – ফুল ও ফল উৎপাদন বাড়ায়।
✅ ৪. মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস (Micronutrients)
- ক্যালসিয়াম (Ca) – মাটির pH নিয়ন্ত্রণ করে।
- ম্যাগনেসিয়াম (Mg) – ক্লোরোফিল গঠনে সহায়ক।
- সালফার (S) – উদ্ভিদের প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে।
✅ ৫. এনজাইম ও হরমোন (Enzymes & Hormones)
- কেঁচোর পরিপাকতন্ত্র থেকে নির্গত এনজাইম ও হরমোন (Auxin, Gibberellin, Cytokinin) গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
✅ ৬. হিউমাস (Humus)
- এটি মাটির গঠন উন্নত করে এবং পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
🔥 ভার্মি কম্পোস্ট কেন ব্যবহার করবেন?
✅ ১০০% প্রাকৃতিক ও রাসায়নিকমুক্ত
✅ মাটির উর্বরতা ও পানি ধারণক্ষমতা বাড়ায়
✅ উদ্ভিদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
✅ ফসলের উৎপাদন বাড়ায়
🌱 ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের নিয়ম
ভার্মি কম্পোস্ট সব ধরনের গাছের জন্য উপযুক্ত, যেমন ফলগাছ, সবজি, ফুলগাছ, ছাদবাগান ও কৃষি জমিতে। তবে এটি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে গাছের বৃদ্ধি ও ফলন আরও ভালো হবে।
✅ ১. টবে বা জিও গ্রো ব্যাগে গাছ লাগানোর সময়
📌 মাটির মিশ্রণ:
- ৫০% কোকোপিট
- ২৫% ভার্মি কম্পোস্ট
- ২৫% সাধারণ মাটি
🔹 কিভাবে ব্যবহার করবেন?
✅ গাছ লাগানোর সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিন।
✅ মাসে ১-২ বার গাছের গোড়ায় ২-৩ ইঞ্চি পুরু করে ছড়িয়ে দিন।
✅ প্রয়োগের পর হালকা পানি দিন, যাতে সার ভালোভাবে মাটিতে মিশে যায়।
✅ ২. শাকসবজি বা ফুলগাছে ব্যবহার
🔹 বীজতলায় (Seed Bed):
- ১০০ বর্গফুট জায়গার জন্য ৫-৭ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট মাটির সাথে মিশিয়ে দিন।
- বীজ বপনের ৫-৭ দিন পর আবার সামান্য পরিমাণ ছড়িয়ে দিন।
🔹 গাছের গোড়ায়:
- প্রতি ৭-১০ দিনে ৫০-১০০ গ্রাম ভার্মি কম্পোস্ট ছড়িয়ে দিতে পারেন।
- প্রয়োগের পর হালকা পানি দিন, যাতে সহজে শোষিত হয়।
✅ ৩. ফলগাছে (আম, লিচু, পেয়ারা, নারকেল ইত্যাদি)
🔹 নতুন চারা লাগানোর সময়:
- প্রতি গাছের জন্য ২-৩ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট মাটির সাথে মিশিয়ে দিন।
🔹 বড় গাছে:
- প্রতি ৩-৪ মাস পর ৫-১০ কেজি সার গাছের গোড়ায় ছড়িয়ে দিন।
- প্রয়োগের পর মাটি নরম করে পানি দিন।
✅ ৪. কৃষি জমিতে (বড় পরিসরে চাষের জন্য)
- ১ বিঘা জমির জন্য ২৫০-৩০০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট প্রয়োগ করুন।
- মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য জমি তৈরির সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিন।
- ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রতি ৩০-৪৫ দিনে ৫০-৭০ কেজি করে প্রয়োগ করতে পারেন।
⚠️ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
✅ ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করার পর রাসায়নিক সার ব্যবহার না করাই ভালো।
✅ প্রয়োগের পর হালকা পানি দিলে গাছ সহজে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে।
✅ প্রতি মাসে ১-২ বার ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করলে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
✅ গাছের গোড়ায় সরাসরি সার না দিয়ে ২-৩ ইঞ্চি দূরে দিন, যাতে শিকড় পুড়ে না যায়।
🔥 সারসংক্ষেপ (Best Practice)
গাছের ধরন | কতটুকু ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করবেন? | কতদিন পর ব্যবহার করবেন? |
---|---|---|
টবের গাছ (সবজি/ফুল) | ৫০-১০০ গ্রাম | প্রতি ৭-১০ দিন পর |
ফলগাছ (নতুন চারা) | ২-৩ কেজি | গাছ লাগানোর সময় |
ফলগাছ (বড় গাছ) | ৫-১০ কেজি | প্রতি ৩-৪ মাস পর |
কৃষি জমি (১ বিঘা) | ২৫০-৩০০ কেজি | জমি তৈরির সময় ও প্রতি ৩০-৪৫ দিন পর |
🌱 ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি রাসায়নিক মুক্ত ফসল উৎপাদন করতে পারবেন!
📢 আপনার যদি আরও বিস্তারিত পরামর্শ বা প্রয়োগের গাইডলাইন দরকার হয়, আমাকে জানান!
Reviews
There are no reviews yet.