Compost Fertilizer Production – কুইক কম্পোস্ট সার উৎপাদনের কৌশল

Compost Fertilizer হল প্রাকৃতিকভাবে তৈরি একটি সার যা মাটির গুণাগুণ উন্নত করে এবং গাছপালার বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি কিচেন স্ক্র্যাপ, পাতা এবং অন্যান্য জৈব পদার্থের নিষ্পত্তি থেকে তৈরি হয়, যা মাটির গঠন, পুষ্টি এবং আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

কুইক কম্পোস্ট তৈরির উপাদান হলো

সরিষার খৈল :  ১ ভাগ + কাঠের গুঁড়া ২ ভাগ+ পচা গোবর ৪ ভাগ।

তৈরি প্রণালি

প্রথমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খালি জায়গা বেছে নিতে হবে। খৈল ভালোভাবে গুঁড়া ও ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। উপাদান তিনটি প্রয়োজনীয় অনুপাতে নিয়ে তার সাথে পানি মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি সঠিক হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য হাতের তালুতে নিয়ে বল তৈরি করে উপর থেকে ছেড়ে দিলে যদি মাটিতে পড়ে ভেঙে যায় তবে তা সঠিক হয়েছে। মিশ্রণ তৈরির পর কোদাল দ্বারা ভালোভাবে চেপে মাটির উপর স্তর সাজাতে হয়। স্তুপে সারের পরিমাণ ৩০০/৪০০ কেজি হলে ভালো। স্তর সাজানোর ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাদার ভেতর প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন হয়। পুষ্টি উপাদান পুড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য কোদাল দিয়ে মিশ্রণটি ভেঙে দিতে হবে। এভাবে ১ ঘণ্টা যাবৎ ঠান্ডা করে পুনরায় স্তরটি সাজাতে হয়। পর্যায়ক্রমে এই কাজটি করলে মিশ্রণটি ঠান্ডা হওয়ার পর স্তুপ আকারে ১৫ দিন রেখে দিলে তা মাঠে প্রয়োগের উপযোগী হয়।

কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট

কেঁচোকে প্রকৃতির লাঙ্গল বলা হয় এ কথা আমরা সবাই জানি। কেঁচো তরকারির খোসা, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা ও নাড়িভুড়ি ইত্যাদি আবর্জনা খেয়ে দ্রুত এগুলো পচিয়ে খুব কম সময়ের মধ্যে জৈব সার তৈরি করে থাকে। প্রথমে গর্ত তৈরি করতে হবে। এরপর এসব গর্তে ঘাস, আমের পাতা বা খামারের ফেলে দেওয়া অংশ এ সবের যে কোনো একটি ছোট ছোট করে কেটে এর প্রায় ২৫ কেজি করে নিতে হবে। তবে আবর্জনা গর্তে ফেলার আগে গর্তে ও তলদেশে পলিথিন দিয়ে মুড়ে দিতে হবে। এতে করে কেঁচো গর্ত থেকে বাইরে যেতে পারবে না। প্রথমে পলিথিন বিছানোর পরে গর্তের নিচে ১৫ সে.মি বা ৬ ইঞ্চির পুরু করে বেড বানাতে হবে। এ বেড তৈরির জন্য ভালো মাটি ও গোবর সমপরিমাণে মেশাতে হবে এবং এসব মেশানো গোবর ও মাটি কেঁচোর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সাধারণত কম্পোস্ট তৈরির কাজে ২ ধরনের কেঁচো ব্যবহৃত হয়। তা হলো: এপিজিক ও এন্ডোজিক। এপিজিক জাতের কেঁচো দেখতে লাল রঙের এবং এরা মাটির ওপরে বিচরণ করে। এরা সার উৎপাদন করতে পারে না। তবে এরা মাটির ভৌত ও জৈব গুণাবলির উন্নতি সাধন করে। কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির জন্য এসব গর্তে গোবর ও মাটি দিয়ে ২৫ কেজির মতো ভরাট করার পরে তাতে প্রায় ২ হাজার কেঁচো প্রয়োগ করতে হবে।

কেঁচো প্রয়োগের পর গর্তের উপরিভাগ পাটের ভেজানো চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং সারের গুণগতমান বজায় রাখার জন্য গর্তে ও উপরিভাগে ছায়া প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব কেঁচো যেসব খাবার খায় তা গর্তে নিয়মিতভাবে সরবরাহ করতে হবে। যেমন স্থানীয় ঘাস, খামারজাত পদার্থ, আখের ও কলার ফেলে দেওয়া অংশ ইত্যাদি। অন্যান্য কম্পোস্ট তৈরির চেয়ে এই কম্পোস্ট তৈরিতে সময় কম লাগে। গবেষণায় দেখা গেছে ভার্মি কম্পোস্ট এ ১.৫৭% নাইট্রোজেন; ১.২৬% ফসফরাস; ২.৬০% পটাশ; ০.৭৪% সালফার; ০.৬৬% ম্যাগনেসিয়াম; ০.০৬% বোরন আছে। অন্যান্য কম্পোস্ট অপেক্ষা কেঁচো কম্পোস্টে অন্যান্য সকল পুষ্টি উপাদান ৭-১০ ভাগ বেশি থাকে। সাধারণত পিঁপড়া, উইপোকা, তেলাপোকা, মুরগি, ইঁদুর, পানি এসব কেঁচোর বড় শত্রু, তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

সবুজ সার

কোনো উদ্ভিদকে সবুজ অবস্থায় মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে সেটা পচে যে সার হয় তাকে সবুজ সার বলে। আমাদের দেশে সবুজ সার হিসেবে যেসব উদ্ভিদ ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেগুলো হলো- ধৈঞ্চা, শন, বরবটি, শিম, খেসারি, মুগ, মাষকলাই, সয়াবিন, মসুর, ছোলা, মটর, চীনাবাদাম, অড়হড়, ঝাড়শিম, ভুট্টা, জোয়ার, আখ ইত্যাদি।

নীল সবুজ শ্যাওলা

 নীল সবুজ শ্যাওলা বাতাসের নাইট্রোজেন তাদের দেহে আবদ্ধ করে রাখে এবং পরে সেগুলো মারা গেলে তাদের দেহে সঞ্চিত নাইট্রোজেন মাটিতে সংযোজিত হয়। প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ কেজি শুকনা শেওলা প্রয়োগ করলে হেক্টর প্রতি ৩০ কেজি নাইট্রোজেন যোগ হয়। এই পদ্ধতি চীন এবং ভারতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

অ্যাজোলা

এটি এক ধরনের জলজ পানা, দ্রুত বর্ধনশীল, দিনে এর দেহের দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। প্রতি হে. জমিতে ৫৫০-১১০০ কেজি পর্যন্ত নাইট্রোজেন যোগ করতে পারে। খুব বেশি গরম এবং ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না। আমাদের দেশে বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ধানখেতে চাষ করা যেতে পারে। একখণ্ড জমি নির্বাচন ।

করে, জমিটিকে সমান ৮ ভাগ করে নিয়ে দু’কোণার দুটি প্লটে প্রতি বর্গমিটারে ৫০০-৮০০ গ্রাম তাজা অ্যাজোলা ছেড়ে দিন। অ্যাজোলা ছাড়ার পর জমির পানি পরিষ্কার হলে প্রতি বর্গমিটার জমিতে ১ গ্রাম হারে টিএসপি গুলিয়ে অ্যাজোলার ওপরে ছেড়ে দিতে হবে। এভাবে এক মাসের মধ্যে জমি অ্যাজোলায় ভরে যাবে। এটি সব ফলের জন্য উপকারী। ধানের জমিতে অ্যাজোলা চাষ করলে চারা রোপণের আগে মাটির সাথে ভালো করে মিশিয়ে দিতে হবে। আর ধানের চারা রোপণের পরে চাষ করলে দাঁড়ানো পানিতে অ্যাজোলা ছেড়ে দিতে হবে। সমস্ত জমিতে অ্যাজোলা ছেয়ে গেলে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এভাবে ২/৩ বার জমিতে অ্যাজোলা মেশালে কোনো ইউরিয়া প্রয়োগ করার দরকার নেই। পুকুর, ডোবা, নালা ও সাময়িক পতিত জমিতে অ্যাজোলা চাষ করে সেখান থেকে উঠিয়ে ফসলি জমিতে পচালে উৎকৃষ্ট জৈব সার তৈরি হয়।

জীবাণু সার

জীবাণু দু’রকমের: মুক্তজীবী নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু সার ও মিথোজীবী নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু সার।

মুক্তজীবী নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু সার

অ্যাজোটোব্যাটর, কুট্রিডিয়াম, ডেরকিমিয়া ইত্যাদি জীবাণুগুলো মাটিতে স্বাধীনভাবে বাস করে। এসব জীবাণু মারা যাওয়ার পর এদের মধ্যকার নাইট্রোজেন যৌগ মাটিতে থাকে এবং পরের ফসলে সেটা গ্রহণযোগ্য হয়। এ জীবাণু বছরে প্রতি হেক্টরে ১৫-২০ কেজি নাইট্রোজেন মাটিতে যোগ করতে পারে। গম, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা, তুলা, পেঁয়াজ, তামাক প্রভৃতি ফসলে ব্যবহার করা যায়। মাত্রা ২০০ গ্রাম জীবাণু সার প্রতি ১০ কেজি বীজে মেশাতে হবে।

মিথোজীবী নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু সার

এ জীবাণু মাষকলাই, মুগ, ছোলা, সয়াবিন, চীনাবাদাম, শন, ধৈঞ্চা এসব গাছের শিকড়ে গুটি তৈরি করে এবং এগুলো বাতাস থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে গাছে সরবরাহ করে। এসব ফসলে উক্ত গুটি হলে বছরে হেক্টর প্রতি ৫০-১৫০ কেজি নাইট্রোজেন মাটিতে জমা হয়। প্রতিটি শস্যের জন্য নির্দিষ্ট রাইজোবিয়াম আছে; সেখানে অন্য জীবাণু ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে না।

ধান চাষে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার

ধান চাষে সারের সুষম, পরিমিত, সময়মতো ও নিয়মমাফিক ব্যবহার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। একেই দক্ষ সার ব্যবহার বলে। ধান চাষে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করে সুষম মাত্রায় জমিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। বাজারে প্রাপ্ত সাধারণ ইউরিয়া থেকে ব্রিকেট মেশিনের সাহায্যে গুটি ইউরিয়া তৈরি করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে তিন ধরনের গুটি ইউরিয়া তৈরি হয়। ০.৯ গ্রাম ওজনের ইউরিয়ার ৩টি গুটি ইউরিয়া বোরো ধান এবং ২টি গুটি ইউরিয়া আউশ/আমন ধানের চার গোছায় মধ্যবর্তী স্থানে পুঁতে দিতে হয়। অথবা ১.৮ গ্রাম ওজনের ইউরিয়ার ১টি গুটি আউশ/আমন ধানের চার গোছার মধ্যবর্তী স্থানে পুঁতে দিতে হয়। ২.৭ গ্রাম ওজনের ইউরিয়ার ১টি গুটি বোরো ধানের চারা গোছার মধ্যবর্তী স্থানে পুঁতে দিতে হয়। ধান চাষে ইউরিয়া সাধারণত ছিটিয়ে প্রয়োগ করা হয়। এভাবে প্রয়োগের ফলে ইউরিয়ার কার্যকারিতা অনেকখানি কমে যায় এবং শতকরা ৭০ ভাগ পর্যন্ত অপচয় হয়ে থাকে। এ অপচয় তিনভাবে হয়ে থাকে। প্রথমত, গ্যাস হয়ে বাতাসে মিশে যায়। দ্বিতীয়ত, পানির সাথে মিশে এক জমি থেকে আরেক জমিতে চলে যায়। তৃতীয়ত, পানির সাথে মিশে মাটির গভীরে চলে যায়; ফলে ধান গাছ খাদ্য হিসেবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ইউরিয়া গ্রহণ করতে পারে না। আইএফডিসি এবং অন্যান্য দেশি বিদেশি সংস্থার গবেষণালব্ধ ফলাফলে দেখা গেছে যে, মাটির ৭-১০ সে.মি. (৩ থেকে ৪ ইঞ্চি) নিচে গুটি ইউরিয়া পুঁতে দেওয়া হলে ইউরিয়ার কার্যকারিতা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়। এছাড়াও ধানের ফলন শতকরা ২০-২৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়।

গুটি ইউরিয়া কেন দানাদার ইউরিয়ার প্রয়োগ অপেক্ষা বেশি লাভজনক?

  • গাছে নাইট্রোজেন প্রাপ্তি দীর্ঘায়িত হয় এবং বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়- গুটি ইউরিয়া প্রয়োগে নাইট্রোজেন এর অপচয় বহুলাংশে হ্রাস পায়। এটা গ্যাস হয়ে বাতাসে মিশে যায় না, পানির স্রোতে/চুয়ে অন্য জমি বা মাটির বেশি গভীরে চলে যায় না।
  • ইউরিয়া কম লাগে- ইউরিয়ার কার্যকারিতা বাড়ার ফলে এর প্রয়োজনীয়তা জমিভেদে শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়।
  • ফলন ও কৃষকের আয় বাড়ে- বিভিন্ন সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে, ছিটিয়ে ইউরিয়া ব্যবহারের তুলনায় গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের ফলে বিঘাপ্রতি ধানের ফলন জমি ভেদে ১৬৫ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
  • জমি উন্নত হয়- গুটি ইউরিয়া প্রয়োগের ফলে মাটি উন্নত হয় এবং অধিক ফলনে সহায়তা করে।

গুটি ইউরিয়া ব্যবহার পদ্ধতি

লাইনে রোপণকৃত ধানের জন্য

  • গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের পাঁচ থেকে সাত দিন পূর্বে ২০ x ২০ সে. মি (৮ x ৮ ইঞ্চি), ব্রি ধান ২৯ এর ক্ষেত্রে (৯ x ৬ ইঞ্চি) লাইন থেকে লাইন এবং চারা থেকে চারার দূরত্বে ধানের চারা রোপণ করুন।
  • ধানের চারা রোপণের ১০-১২ দিনের মধ্যে মাটি শক্ত হওয়ার আগে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করুন।
  • জমিতে যখন ২-৩ সে.মি (১ ইঞ্চি) পরিমাণ পানি থাকে সে সময় গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করা সহজ হয়।
  • প্রয়োগের সময় লুঙ্গির ভাঁজে বা কৌটার মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিমাণ গুটি ইউরিয়া নিন যাতে লাইনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যাওয়া যায়।
  • জমির ডান দিক থেকে গুটি প্রয়োগ শুরু করুন। ধানের চারার এক এবং দুই নম্বর লাইনের প্রতি চার গোছার মাঝখানে মাটির ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি (হাতের আঙুলের সমান দীর্ঘ) নিচে গুটি ইউরিয়া পুঁতে দিন। বোরো ধানে প্রতি চার গোছার জন্য ০.৯ গ্রাম ওজনের ৩টি অথবা ২.৭ গ্রাম ওজনের ১টি গুটি প্রয়োগ করুন। কাদা যদি নরম না থাকে তাহলে স্থাপনকৃত স্থানগুলিকে কাদা দিয়ে ঢেকে দিন। আউশ/আমন ধানে প্রতি চার গোছার জন্য ০.৯ গ্রাম ওজনের ২টি অথবা ১.৮ গ্রাম ওজনের ১টি গুটি প্রয়োগ করুন।
  • গুটি প্রয়োগ করে জমির শেষ প্রান্তে এসে প্রয়োজনে আবার গুটি নিন এবং পূর্বের ন্যায় পরবর্তী তিন ও চার নম্বর লাইনে প্রতি চার গোছার মাঝখানে গুটি প্রয়োগ করে সামনে এগিয়ে যান।
  • অনুরূপভাবে আবার জমির শেষ প্রান্তে এসে পাঁচ ও ছয় নম্বর লাইনের মাঝখানে একই নিয়মে গুটি প্রয়োগ করুন।
  • এ প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ জমিতে গুটি প্রয়োগ শেষ করুন। লক্ষ রাখবেন যেন গুটি প্রয়োগকৃত স্থানে পা না পড়ে।
  • কোনো কোনো সময় দেখা যায় কৃষকগণ একবারে ২ অথবা ৪ অথবা ৬ লাইনে গুটি প্রয়োগ করতে সুবিধা বোধ করেন।
  • গুটি প্রয়োগের ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে নামা উচিত নয়। যদি এর মধ্যে জমিতে নামতেই হয় তবে যে স্থানে পা রেখে গুটি প্রয়োগ করা হয়েছিল সে স্থানে পা রেখে জমিতে নামতে পারেন।
  • গুটি প্রয়োগের পর জমিতে প্রয়োজনীয় পানি রাখতে হবে যাতে জমির মাটি ফেটে না যায়।

অন্যান্যভাবে রোপণকৃত ধানের জন্য

এলোমেলোভাবে রোপণকৃত ধানের জমিতেও গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গুটি একটি স্থানে স্থাপনের পর ৪০ সে.মি (১৬ ইঞ্চি) দূরত্ব বজায় রেখে ডানে বায়ে এবং সামনের দিকে গুটি স্থাপন করে এগিয়ে যেতে হবে। এতে হয়তো প্রতি গোছার সমদূরত্বে গুটি স্থাপন সম্ভব নাও হতে পারে। কিন্তু ফলনের দিক থেকে ফসল ভালোই হয়ে থাকে।

গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের সুফল লাভে অবশ্যকরণীয় অন্যান্য কার্যক্রম

  • ইউরিয়া ছাড়া প্রয়োজনীয় অন্যান্য সব সার ব্যবহার করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল জাতের ভালো বীজ ব্যবহার করুন।
  • যেসব জমিতে পানি কম চুষে যায়, সেসব জমিতে গুটি প্রয়োগ করুন। অর্থাৎ বেলে মাটিতে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করবেন না।
  • ভালো ফলন লাভের জন্য লাইনে রোপণকৃত ধানে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করুন।
  • সময়মতো পোকামাকড় দমন করুন।
  • সময়মতো সেচ দিন যাতে পানির অভাব না হয়।
  • সময়মতো আগাছা দমন করুন।

গুটি ইউরিয়ার অন্যান্য ব্যবহার

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মাঠ পর্যায়ে গবেষণালব্ধ ফলাফলে দেখা যায় যে, বাঁধাকপি, ফুলকপি এবং বেগুন ফসলে সুপারিশকৃত ইউরিয়ার পরিমাণ থেকে শতকরা ১০ থেকে ২০ ভাগ কম পরিমাণ গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করেও লাভজনক ফলন পাওয়া গেছে। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুঁড়া ইউরিয়ার চেয়ে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার একটি লাভজনক প্রযুক্তি।

গুঁড়া ইউরিয়া বনাম গুটি ইউরিয়া: গুঁড়া ইউরিয়া

  • গুঁড়া ইউরিয়ার কার্যকারিতা মাত্র শতকরা ৩০ ভাগ
  • নাইট্রোজেন গ্যাস আকারে উড়ে যায়
  • পানির সাথে ছুঁয়ে মাটির গভীর চলে যায়
  • গুটি ইউরিয়ার তুলনায় শতকরা ৩০-৪০ ভাগ বেশি পরিমাণে গুঁড়া ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হয়।
  • ২-৩ বার ইউরিয়া ছিটাতে হয় ।
  • ফসলের উৎপাদন কম হয় যার ফলে কৃষকের লাভ কম হয়।
  • বাতাস ও পানি দূষণ করে।
  • আগাছা বেশি হয়।

গুটি ইউরিয়া

  • গুটি ইউরিয়ার কার্যকারিতা প্রায় শতকরা ৬০-৭০ ভাগ।
  • নাইট্রোজেন গ্যাস আকারে উড়ে যেতে পারে না।
  • পানির সাথে ছুঁয়ে মাটির গভীরে চলে যেতে পারে না।
  • ৩০-৪০ ভাগ কম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হয়। একবার প্রয়োগই যথেষ্ট।
  • উৎপাদন শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পায়।
  • গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে অধিক লাভ হয়।
  • বাতাস ও পানি পরিষ্কার থাকে এবং আগাছা কম হয়।

আমাদের ফেসবুক পেজ = Siraj Tech Facebook

ছাদ বাগান করার জন্য জিও ব্যাগের অর্ডার করতে = Geo Grow Bag

দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সব ফল ও শাক-সব্জির বীজ পাবেন আমাদের কাছে। 👉 HIGH QUALITY GARDENING SEEDS

ছাদ বাগানের বিভিন্ন সরঞ্জাম। 👉 HIGH QUALITY GARDENING TOOLS

গাছের জন্য বিভিন্ন জৈব কীটনাশক। 👉 ORGANIC FERTILIZERS AND PESTICIDES

নদী ও পুকুরের পাড় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও রোল। 👉Geobag Geotube and Geoshee

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *