কেউ বলে ভেওয়াতাবাল হলেও বলা এফওয়া। এটা বাংলাদেশের গ্রামের কাছে একটা পরিচিতি ফল হলেও ফলটি এখন বিলুপ্তির পথে। এটার ইয়রে মানুষের Monkey jack (Artocarpus lakoocha)। ইংরেজি নামের সাথে কাঁঠালের একটা সম্পর্ক থাকলেও এটা দেখতে অনেকটা ছোট কাঁঠালের মতোই। তাই দেখতে অদ্ভুত আকৃতির এবং টক-মিষ্টি স্বাদের ঐতিহ্যবাহী এই ফলটি গ্রাম বাংলার কোনো কোনো আঙুলে বনকাঁঠাল, বত্তা ফল নামেও পরিচিত।
ছোটদের বেশ পছন্দের এই ফলটি মধুমাস জ্যৈষ্ঠ গ্রাম বাংলার কোনো অঞ্চলে এখনো বেশ পরিচিত। বিশেষ করে দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলায় এখনো ডেওয়া বা বত্তা ফলের গাছ প্রচুর চোখে পড়ে। বড় বড় পাতার এই ফলের গাছটি দেখতে কাঁঠাল গাছের মতোই। মাঝারি ও এবড়োথ্যাবড়ো আকারের এই ফলের খোসাটা বেশ পাতলা। পাকলে নরম হয়ে যায়। ভেতরে কাঁঠালের মতোই ছোট ছোট রোওয়া বা কোয়া আছে। খেতে টক-মিষ্টি। তবে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অনেকের কাছেই এই ফলটি অচেনা। গ্রাম-বাংলায় বন-বাদড় ধ্বংসের এবং ঘনবসতির কারণে ডেওয়া বা বনকাঁঠাল এখন দুর্লভ হয়ে পড়ছে। গ্রাম-গঞ্জে এখনো কোনো হাটে বাজারে এই ফলটি দেখতে পাওয়া গেলেও এবং কদর থাকলেও শহুরে মানুষের কাছে কদর একেবারেই কমে গেছে। তবে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা এর কদর ঠিকই জানে। ডেওয়া গাছ বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট, কাঁঠাল গাছের মতো বড় আকারের বৃক্ষ। প্রায় ২০-২৫ ফুট উঁচু হয়। গাছটির ছাল ধূসর-বাদামি রঙের। গাছের ভেতরে এবং পাতার বোঁটায় সাদাটে কষ বা আঠা থাকে। পাতা ৬-১২ ইঞ্চি লম্বা ও ৪-৭ ইঞ্চি চওড়া হয়, যা অনেকটা কাকডুমুরের পাতার মতো। তবে আকারে কাকডুমুরের পাতার চেয়ে সামান্য বড়। তবে এটা হাফ ড্রামে করে ছাদ বাগানে চাষ করা সম্ভব। ডেওয়ার স্ত্রী ও পুরুষ ফুল আলাদা। স্ত্রী ফুল আকারে বড় ও মসৃণ। ফুলে পাপড়ি নেই, ছোট গুটির মতো। স্ত্রী ফুল থেকে ফল হয়। ফল কাঁঠালের মতো যৌগিক বা গুচ্ছফল। বহিরাবরণ অসমান। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ বর্ণের হয়। ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ। প্রতিটি শাঁসের মধ্যে একটি করে বীজ থাকে। সাধারণত মার্চ মাসে ফল আসে এবং মে মাসের শেষের দিকে ফল পাকতে শুরু করে।
গাছ রোপণের উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। বাণিজ্যিক আকারে বাংলাদেশে এই ফলের চাষ এখনো শুরু হয়নি। দেখতে অদ্ভুত, খেতে টক-মিষ্টি ডেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এর কিছু ভেষজগুণও রয়েছে। ঠান্ডা পানির সাথে ডেওয়া ফলের রস মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করতে পারছে দেহের ওজন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় বলে গ্রামীণ কবিরাজেরা বলে থাকেন। ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ ফল। পাকা ফল পিত্তবিকারে ও যকৃতের পীড়ায় হিতকারী। এটার ছালের চামড়া গুঁড়ো করে মুখে লাগলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয় এবং মুখে ব্রণের দূষিত পুঁজ বের হতে সহায়তা করে। মুখের রুচি ফেরাতে খাওয়া হয় এই ফল। ডেওয়া ফলের রসের সাথে সামান্য লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দুপুরের খাবারের আগে খেলে মুখে রুচি ফিরে আসে। জানা যায়, পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, মধুর অম্লযুক্ত পাকা ডেওয়া অরুচি ও পেটের বায়ুনাশে অমৃতের মতো কাজ করে। শুধু তাই নয়, পিত্ত ও যকৃতের জন্য এটি উপকারী। ডেওয়া ফল রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করেও খাওয়া যায়। তবে ফলের সঠিক ও আধুনিক সংরক্ষণ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারলে বাণিজ্যিক আকারেও চাষ করা সম্ভব হতো।

ছাদে ডেওয়া চাষ ও পরিচর্যা :
ছাদে ডেওয়া ফলের চারা কলম চারা লাগানোর জন্য হাফ ড্রাম অথবা সিমেন্টের পট বা জিও ব্যাগ নিয়ে তাতে এই বইয়ের “ছাদ বাগানের জন্য মাটি প্রস্তুত ও চারা রোপণ” অধ্যায়ে ছাদ বাগানের জন্য “ছাদ বাগানের জন্য আদর্শ মাটি তৈরি করত সেখানে ডেওয়া ফলের কলম/কাটিং রোপণ করতে হবে। চারা গাছটিকে সোজা করে সঠিকভাবে রোপণ করতে হবে। তারপর গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উঁচু করে হাত দিয়ে মাটি চেপে চেপে দিতে হবে। ফলে গাছের গোড়া দিয়ে পানি বেশি ঢুকতে পারবে না। একটি সোজা চিকন লাঠি দিয়ে গাছটিকে বেঁধে দিতে হবে। চারা রোপণের শুরুর দিকে পানি অল্প দিলেই চলবে। পরে ধীরে ধীরে পানি দেওয়া বাড়াতে হবে। তবে গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেওয়া যাবে না। মাটিতে রসের ঘাটতি দেখা দিলে প্রয়োজন মতো গাছে সেচ দিতে হবে। সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অত্র পুস্তকের “ছাদ বাগানের নিয়মিত পরিচর্যা” অধ্যায়ের “বিভিন্ন বয়সি ফল গাছের জন্য বছরভিত্তিক সার প্রয়োগের মাত্রা” অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়মাবলি অনুসরণ করুন। Coconut tree fertilizer and pest control অন্যান্য পরিচর্যার ব্যাপারেও “ছাদ বাগানের নিয়মিত পরিচর্যা” অধ্যায়ের অপরাপর বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
বিশেষ ধরনের কোনো রোগ পোকামাকড়ের তেমন কোনো রেকর্ড পাওয়া যায় না। তবে সাদা মাছি, থ্রিপস, ছাতরা পোকা মিলিবাগ দেখা দিলে অন্যান্য ফল চাষে যে ধরনের ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে, সেটা অনুসরণ করতে হবে। চারা/কলমের প্রাপ্তিস্থান: বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার সেন্টারসমূহ, বিএডিসি’র এগ্রো সার্ভিস সেন্টার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে ভালো জাতের ডেওয়ার চারা/কলম পাওয়া যায়। আবার বিশ্বস্ত ব্যক্তির কাছ থেকেও এসব চারা/কলম সংগ্রহ করতে পারেন।
আমাদের ফেসবুক পেজ = Siraj Tech Facebook
ছাদ বাগান করার জন্য জিও ব্যাগের অর্ডার করতে 👉 Geo Grow Bag
দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সব ফল ও শাক-সব্জির বীজ পাবেন আমাদের কাছে। 👉 High Quality Gardening Seeds
ছাদ বাগানের বিভিন্ন সরঞ্জাম। 👉 High Quality Gardening Tools
গাছের জন্য বিভিন্ন জৈব কীটনাশক। 👉 Organic Fertilizers and Pesticides
ঘর সাজানোর প্রোডাক্ট। 👉 Home Decor Item
নদী ও পুকুরের পাড় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও রোল। 👉Geobag Geotube and Geosheet
বাড়ির ডিজাইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে। 👉 Architectural & Structure design