ভূমিকা
বাংলাদেশে প্রায় ১৫৬ রকমের স্থানীয় ও বিদেশি শাকসবজি জন্মে। এগুলোর মধ্যে ৯টি সবজিকে প্রধান সবজি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এগুলো হল বেগুন, আলু, টমেটো, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ঢেঁড়শ, মূলা ও বিভিন্ন রকমের কুমড়া গোত্রীয় সবজি। কুমড়া গোত্রীয় সবজির মধ্যে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দুল, পটল, করলা, কাকরোল, শসা ইত্যাদিসহ প্রায় ২০ রকমের সবজি আছে। মোট সবজি চাষের জমির প্রায় ৮০% দখল করে রেখেছে এসব প্রধান সবজি। আলু, মিষ্টি আলু, কচুর লতি, কচুমুখি, মানকচু ইত্যাদিও অন্যতম প্রধান সবজি। মোট কচু চাষের জমির প্রায় ৮৫% জমিতে চাষ হয় মুখিকচু ও পানিকচু। সবজির পাশাপাশি ডাটা, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি প্রধান পাতাজাতীয় সবজি বা শাক।
শাকসবজি উৎপাদনে বর্তমানে বাংলাদেশে সাফল্য অনেক। শাকসবজির ফলন বৃদ্ধিতে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে তৃতীয়। তবু এতো শাকসবজি ফলানোর পরও সেসব আমাদের সবজি চাহিদার সবটুকু পারছি না পূরণ করতে। তাই সবজির উৎপাদন বৃদ্ধির এখনো অনেক সুযোগ রয়ে গেছে। বাংলাদেশের মোট জমির তিনভাগের দুইভাগ চাষযোগ্য। এর আবার প্রায় ৭৯% জমিতে ধান চাষ হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে ২০১৫-২০১৬ সালে মোট ৮.৩১৭ লাখ হেক্টর জমিতে ১৫২.৬৪ লাখ টন শাকসবজি উৎপাদিত হয়েছিল। গড় ফলন ১৮.৩৫৩ টন/হেক্টর। শাকসবজি চাষের জমি ও ফলন বাড়ানোর এখনো সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি একই জমিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ঘরে ফলন বাড়ানোও সম্ভব। যেদেশে এত সহজে প্রায় শত রকমের শাকসবজি জন্মে সেই দেশে প্রতিবছর প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ ভিটামিন এ-এর অভাবে ভুগবে, তা হতে পারে না। আমাদের পারিবারিক পুষ্টি উন্নয়নে তাই বসত বাড়ির আঙ্গিনা এমনকি শহরে ছাদে সবজি চাষের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য শাকসবজি চাষের আধুনিক কলাকৌশলগুলো জানা দরকার, চেনা দরকার আধুনিক জাতগুলোও।
তবে শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি করলেই আমাদের পুষ্টি নিশ্চিত হবে না বা পুষ্টিজনিত রোগের হাত থেকে আমরা রেহাই পাব না। ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ শাকসবজি উৎপাদনের ওপরও জোর দিতে হবে। প্রতি বছর বিভিন্ন পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণে প্রায় ১৫-২৫% শাকসবজি নষ্ট হয়। এর হাত থেকে রেহাই পেতে প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত বালাইনাশক শাকসবজি ক্ষেতে নির্বিচারে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণসহ আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। তাই সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে শাকসবজির বিভিন্ন বালাই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেজন্য শাকসবজির বালাই ও তার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সম্পর্কেও ভাল ধারণা থাকতে হবে। এসব দিক বিবেচনা করে সবজি চাষিদের জন্য লেখা হয়েছে মাঠনির্ভর এই বইটি।
শুধু শাকসবজির আধুনিক চাষ পদ্ধতি ও রোগ-পোকার ব্যবস্থাপনাই নয়, সবজি চাষিরা সারা বছর ধরে কিভাবে কোন সবজির পর কোন মাসে কি সবজি চাষ করতে পারেন এবং বারো মাসেই বাজারে শাকসবজির যোগান দিতে পারেন সে বিষয়টিকেও গুরুত্ব সহকারে লেখা হয়েছে। পাশাপাশি লাভজনক সবজি চাষের কিছু পরামর্শও দেয়া হয়েছে। আশাকরি বইটি শাকসবজি চাষ সংশ্লিষ্ট সকলের যথেষ্ট কাজে লাগবে। বইটি সম্পর্কে যে কোন মতামত ও পরামর্শ সানন্দে গ্রহণ করা হবে। পরবর্তী সংস্করণে সেগুলো অন্তর্ভূক্ত করার আশা রাখি।
-মৃত্যুঞ্জয় রায়
সূচিপত্র
প্রথম অধ্যায় – স্বাস্থ্য ভালো রাখতে শাকসবজি
সবজি খেতে অনীহা ও তার ফল # ০৮, পুষ্টির আধার শাকসবজি # ১১, অপেক্ষাকৃত বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ কিছু শাকসবজি # ১২, শিশুদের জন্য শাকসবজি # ১৪, বিষ দেয়া সবজি থেকে সাবধান # ১৫
দ্বিতীয় অধ্যায় – বারো মাস সবজি চাষ
বারোমাস সবজি চাষ পঞ্জিকা # ২০, বারো মাস সবজি লাগানোর বর্ষপঞ্জি # ২১, বসতবাড়িতে বারো মাসের সবজি চাষ পরিকল্পনা # ২৪, আদর্শ কিচেন গার্ডেনে/ছাদ বাগানে বারো মাসের সবজি চাষ পঞ্জিকা # ২৫, বসতবাড়ির বিভিন্ন স্থানে বারো মাসের সবজি চাষ পঞ্জিকা # ২৫
তৃতীয় অধ্যায় – বাছাই শাকসবজির চাষাবাদ
বেগুন # ২৭, টমেটো # ৩৬, বাঁধা কপি # ৪০, ফুলকপি # ৪৩, ওলকপি # ৪৭, ব্রোকলি # ৫০, লাল বাঁধাকপি # ৫৫, চীনা বাঁধাকপি # ৬০, মূলা # ৬৪, শিম # ৬৭, বরবটি # ৬৯, ঢেঁড়শ # ৭১, লালশাক # ৭৩, গিমা কলমী # ৭৫, পুঁইশাক # ৭৭, ক্যাপসিক্যাম # ৭৯, ওলকচু # ৮৪, লাউ # ৮৮, মিষ্টি কুমড়া # ৯২
চতুর্থ অধ্যায় – সবজির পোকামাকড়
বেগুনের ডগা ও ফলছিদ্রকারী পোকা # ৯৫, কুমড়া ফলের মাছি পোকা # ৯৬, জাব পোকা # ৯৭, শিমের ফলছিদ্রকারী পোকা # ৯৮, জ্যাসিড বা শ্যামা পোকা # ৯৯, কাঁটালে পোকা # ১০০, পাম্পকিন বিটল পোকা # ১০১, কপির সরুই পোকা # ১০২, বাঁধাকপির মাথা থেকো লেদা পোকা # ১০৩, টমেটোর ফল ছিদ্রকারী পোকা # ১০৪, কাটুই পোকা # ১০৫, লাল ক্ষুদ্র মাকড় # ১০৬, পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা # ১০৭, ছাতরা বা দইয়ে পোকা # ১০৮, সাদা মাছি # ১০৮, পাতা মোড়ানো পোকা # ১০৯, পাতা খেকো লেদা পোকা # ১১০
পঞ্চম অধ্যায় – সবজির রোগ
ঢলে পড়া বা নেতানো রোগ # ১১২, চারা ধ্বসা রোগ # ১১৪, মোজেইক রোগ # ১১৫, ফল পচা ও কাণ্ড পচা রোগ # ১১৬, ক্ষুদে পাতা রোগ # ১১৮, আগাম ধ্বসা # ১১৯, নাবি ধ্বসা # ১২০, ডাউনী মিলডিউ # ১২১, সাদা গুঁড়া রোগ # ১২২, এ্যানথ্রাকনোজ বা ফলপচা # ১২৩, শিকড় পচা # ১২৪, পাতা কোঁকড়ানো # ১২৫, শিকড়ে গিট রোগ # ১২৬, কালো পচা # ১২৭, পাতার দাগ পড়া রোগ # ১২৮, কাণ্ড পচা # ১২৯
পরিশিষ্ট-১
শাকসবজির পোকামাকড়নিয়ন্ত্রণে অনুমোদিত কীটনাশকের তালিকা # ১৩১
পরিশিষ্ট-২
শাকসবজির রোগ নিয়ন্ত্রণে অনুমোদিত রোগনাশকের তালিকা # ১৩৩
আমাদের ফেসবুক পেজ = Siraj Tech Facebook
ছাদ বাগান করার জন্য জিও ব্যাগের অর্ডার করতে = Geo Grow Bag
ছাদ বাগানের বিভিন্ন সরঞ্জাম। 👉 HIGH QUALITY GARDENING TOOLS
গাছের জন্য বিভিন্ন জৈব কীটনাশক। 👉 ORGANIC FERTILIZERS AND PESTICIDES
Reviews
There are no reviews yet.